তায়াম্মুম কখন করতে হয় এবং কিভাবে করে ?
পাক মাটি বা মৃত্তিকা জাতীয় কোন পদার্থ ব্যবহার করিয়া ইবাদতের জন্য পবিত্র হওয়াকে তায়াম্মুম বলে।
পানি দুষ্প্রাপ্য হইলে, পানি আনিতে গেলে বাঘ ভাল্লুক ইত্যাদি হিংস্র জন্তুর ভয় থাকিলে, সাপ, বিচ্ছু, শত্রু আক্রমনের ভয় থাকিলে, পানি স্পর্শে রোগ বৃদ্ধি হওয়ার কারণ থাকিলে, শীতের আধিক্যতায় অযু গোছল করিলে প্রাণ নাশের আশঙ্কা থাকিলে নাপাক পরুষ ও নারী এবং হায়েয ও নেফাছোয়ালী স্ত্রিলোক অযু গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করিয়া পাক হইতে হয়। গরম পানির ব্যবস্থা করিতে পারিলে এবং ইহা ব্যবহারে রোগের কোন অসুবিধা না হইলে তায়াম্মুমের পরিবর্তে গরম পানি ব্যবহার করিয়া পবিত্র হইতে হইবে।
পাক মাটি, বালু, এবং পাথর দ্বারা তায়াম্মুম করা যায়।
যা যা জানতে পারবেন এখান থেকে–
- তায়াম্মুমের নিয়ত
- তায়াম্মুমের ফরয
- গোসলের ফরয
- তাইয়াম্মুমের নিয়ম
- গোসল
- স্ত্রীলোকের কখন গোসল ফরয হয়
- গোসলের ফরয
তায়াম্মুমের ফরয
অযুর পরিবর্তে তায়াম্মুমের নিয়ত
তায়াম্মুমের নিয়তের বাঃ উঃ— নাওয়াইতু আন্ আতায়াম্মামা রাআল্লিল্ হাদাসে ওয়াস্তে বাহাতাল্লিচ্ছালাতে ওয়া তাকার্রোবান্ ইলাল্লাহে তায়ালা।
তায়াম্মুমের নিয়তের অর্থ :– আমি অপবিত্রতা দূরীকরণ ও নামাজ বৈধকরণ এবং আল্লাহ্ তায়ালার নৈকট্যলাভের জন্য তায়াম্মুম করার নিয়ত করিলাম।
ফরয গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম
ফরয গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করিলে (রফআল্লিল হাদাসে) এর পরিবর্তে (রফআল্লিল্ জানাবাতে) বলিবে।
তাইয়াম্মুমের নিয়ম:-
তাইয়াম্মুমের নিয়ম:- দুই হাতের অঙ্গুলী প্রসারিত করিয়া পাক মাটি অথবা বালুর উপর মারিবে। হাতে মাটি বেশী লাগিলে দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলীর নীচের অংশ পরস্পরে আঘাত করিয়া ঝাড়িয়া ফেলিবে। তারপর দুই হাত দ্বারা মুখমণ্ডল (যতটুকু অযুর মধ্যে ধোওয়া ফরয ততটুকু) মসেহ্ করিবে, পুনরায় উভয় হাত মাটিতে মারিয়া বাম হাতের মধ্যমা, অনামিকা ও কনিষ্ঠাঙ্গুলীর পেট ও হাতের তালুর কতকাংশ দ্বারা ডান হাতের পিঠ আঙ্গুলের মাথা হইতে কনুই পর্যন্ত একবার মসেহ্ করিবে।
পরে তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলীর পেট ও হাতের তালুর অবশিষ্টাংশ দ্বারা ডান হাতের পেট মসেহ করিবে। এইরূপভাবে ডান হাত দ্বারা বাম হাত মসেহ্ করিবে। আঙ্গুলের ফাঁকে ধূলা প্রবেশ না করিলে তৃতীয়বার মাটিতে হাত মারিয়া অঙ্গুলী খেলাল করিবে। চুল পরিমাণ জায়গাও মসেহ্ করিবার বাকী থাকিলে তায়াম্মুম শুদ্ধ হইবে না।
তাইয়াম্মুম ভঙ্গের কারণঃ
তাইয়াম্মুম ভঙ্গের কারণঃ যে সকল কারণে অযু ভঙ্গ হয়, সে সকল কারণে তায়াম্মুম ভঙ্গ হইয়া যায়। ইহা ছাড়া পানি পাওয়া গেলে এবং পানি ব্যবহার করিবার শক্তি পাইলে তায়াম্মুম ভঙ্গ হইয়া যায়।
গোসল
গোসল চারি প্রকার
গোসল চারি প্রকার যথাঃ- ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত ও মোস্তাহাব। স্ত্রীর সহিত মিলনের পর, স্বপ্ন দোষ হইলে অথবা ঘুম হইতে উঠিয়া স্বপ্ন দোষের কথা মনে না থাকিলেও কাপড় বা বিছানায় মণির দাগ দেখা গেলে অথবা কামভাবে মণি বাহির হইলে গোসল ফরয হয়।
স্ত্রীলোকের কখন গোসল ফরয হয়
স্ত্রীলোকেরও উল্লেখিত অবস্থায় গোসল ফরয হয়। এতদ্ব্যতীত হায়েজ নেফাছের রক্ত বন্ধ হইলেও গোসল ফরয হয়।
(১) স্বাভাবিক অবস্থায় কামভাব ব্যতীত এবং (২) প্রস্রাবের সময় কামভাব বাতীত মণি বাহির হইলে পুরুষ ও স্ত্রীলোকের জন্য গোসল ফরয হয় না। কিন্তু উক্ত দুই অবস্থায় কামভাব বর্তমান থাকিলে গোসল ফরয হইবে। ফরয গোসল ভালমতে আদায় না করিলে মহাপাপী হইবে এবং কোন ইবাদতই কবুল হইবে না। তাই গোসলের তিনটি ফরয অতি সাবধানের সহিত পালন করিতে হয়।
গোসলের ফরয
গোসলের ফরয তিনটি, যথা:- (১) মুখ ভর্তি পানি লইয়া গড়গড়ার সহিত কুলি করা, কিন্তু রোযাদার গড়গড়া করিবে না। (২) নাকের ভিতর পানি দ্বারা পরিষ্কার করা (৩) সমস্ত শরীর পানি দ্বারা ভালমতে মর্দন করিয়া ধৌত করা যাহাতে মাথা হইতে পা পর্যন্ত প্রত্যেক পশমের গোড়ায় পানি পৌঁছে।