শবে বরাতের নামাজ ,ফজিলত,আমল দলীল সহ
শবে বরাত নামাজ শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিনগত রাত্রিতে পড়িতে হয়। ইশার নামাজের পর হইতে ছোব্হে কাজের পর্যন্ত এই নামাজের সময় থাকে। নামাজ, কোরান তিলাওয়াত, যিক্র ও মোরাকাবা, দোয়া-দরূদ, ইস্তিগফার ইত্যাদি নফল ইবাদতে সারা রাত্রি জাগরণ থাকিলে বেশুমার ছওয়াব পাওয়া যায় এবং সমস্ত গুনাহ্ মাফ হয়। দুই রাকাত করিয়া এই নামাজ পড়িতে হয়।
কিভাবে নামাজ পরবেন? কিভাবে নিয়ত করবেন? নামাজ কত রাকআত পড়বেন ? শবে বরাতের নামাজের ফজিলত কি? শবে বরাতে কি আমল করবেন? সব কিছু আমি নিচে বিস্তারিত বলে দিব।
শবে বরাতের রোজা কয়টি shobe borater roja koyti
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত বাংলা উঃ— নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহে তায়ালা রাকয়াতাই ছালাতে লাইলাতিল্ বারাআতে মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতে আল্লাহু আকবর।
শবে বরাতেরনামাজ পড়িবার নিয়ম
বরাতের নামাজ ইশার নামাজের পর এবং বিতর নামাজের পূর্বে পড়িতে হয়। (১) সুলতানুল আউলিয়া হযরত হাফেয মনিরুদ্দীন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি নিচে বর্ণিত নিয়মে শবে বরাতের নামাজ শিক্ষা দিয়াছেন।
শবে বরাতের নামাজ পড়িবার নিয়ম
- তাকবীর বাধবেন
- ছানা পরবেন
- ফাতিহা পরবেন
- তড়পর সূরা মিলাবেন
শবে বরাতের আমল
শবে বরাতের আমল প্রথম দুই রাকাত নামাজের প্রথম রাকাতে ছানা, আউযুবিল্লাহ্, বিসমিল্লাহ্ এবং সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাছ দুইশত বার এবং দ্বিতীয় রাকাতে একশত বার পড়িবে। তারপর দুই রাকাতের প্রথম রাকাতে ছানা, আউযুবিল্লাহ্, বিসমিল্লাহ্ এবং সূরা ফাতিহার পর সুরা ইখলাছ একশত বার এবং দ্বিতীয় রাকাতেও একশত বার পড়িয়া নামাজ শেষ করিবে। অর্থাৎ এই মোট চার রাকাতে সূরা ইখলাছ পাঁচশত বার পড়িতে হয়।
(২) শবে বরাতের আমল পবিত্র হাদীছ শরীফ মতে এই রাত্রিতে যে ব্যক্তি চার রাকাত নামাজ পড়ে এবং প্রথম রাকাতে আউযুবিল্লাহ্, ইত্যাদির পর সূরা ইখলাছ পঞ্চাশ বার এবং দ্বিতীয় রাকাতেও পঞ্চাশবার পড়ে এবং এই নিয়মে বাকী দুই রাকাত নামাজ পড়ে, অর্থাৎ প্রতি রাকাতে পঞ্চাশ বার করিয়া চার রাকাতে মোট দুইশত বার সূরা ইখলাছ পড়ে এবং তারপর দিন রোযা রাখে, তাহার পঞ্চাশ বৎসরের গুনাহ্ মাফ হইবে।
(৩) শবে বরাতের আমল এই রাত্রিতে আরও দুই রাকাত নামাজ পড়িবে। প্রত্যেক রাকাতে আয়াতুল কুরছী একবার এবং সূরা ইখলাছ পনর বার পড়িবে। সালামের পর একশত বার দরূদ শরীফ পড়িবে। এই নামাজ পড়িলে সমস্ত গুনাহ মাফ হইবে, রিযিকে ফরাগত হইবে এবং নানা প্রকারের পেরেশানী হইতে নাজাত পাইবে।
(৪) শবে বরাতের নামাজ পড়িবার নিয়ম এই রাত্রিতে দুই রাকাত করিয়া চৌদ্দ রাকাত নামাজ যে কোন সূরা দিয়া পড়িবে। নামাজের পর সূরা ফাতিহা চৌদ্দ বার, সুরা ইখলাছ চৌদ্দ বার, সূরা ফালাক্ব চৌদ্দ বার, সূরা নাছ চৌদ্দ বার, আয়াতুল কুরছী এক বার এবং নীচের আয়াত দুইটি এক বার পড়িবে—
শবে বরাতের নামাজ পড়িবার নিয়ম বাঃ উঃ– লাকাদ জা-আকুম রাছুলুম মিন্ আনফুছিকুম আযীযূন আলাইহি আনিছুম হারীছুন আলাইকুম্ বিলমু’মিনীনা রাউফুর রাহীম। ফা-ইন্ তাওয়াল্লাও ফাকুল হাবিয়াল্লাহু ইলাহা ইল্লাহু আলাইহি তাওয়াক্বাতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আযীম।
অর্থঃ নিশ্চয় তোমাদের নিকট তোমাদের নিজেদের মধ্য হইতে একজন রাছুল আগমন করিয়াছেন। দুঃখ তাহার কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের মঙ্গলের প্রতি আগ্রহশাল, মুমেনদের প্রতি তিনি বড়ই স্নেহশীল দয়াবান। যদি তাহারা মুখ ফিরাইয়া লয় তাহলে (হে রাছুল) তুমি বলিয়া দাও, আল্লাহ্ তায়ালাই আমার জন্য যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত অন্য কোন মা’বুদ নাই। আমি তাঁহারই এবং সুবিশাল আরশের মালিক। তারপর যে দোয়া করিবে, কবুল হইবে।
শবে বরাতের ফজিলত
শবে বরাতের ফজিলত বা ছওয়াব, বিশ বৎসর একাধারে ইবাদতের ছওয়াব এবং পরের দিন রোযা রাখিলে অগ্র-পশ্চাৎ দুই বৎসর রোযা রাখার ছওয়াব পাইবে।
শবে বরাতের ফজিলত,শবে বরাতের নামাজ তিনি হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লামকে এই নামাজ পড়িতে দেখিয়াছেন।এই রাত্রিতে তিনবার সূরা ইয়াছীন পড়িলে ধনবান হইবে এবং আসমান জমিনের বালা মছিবত হইতে রক্ষা পাইবে।শবে বরাতের ফজিলত এই রাত্রে ছেলে-মেয়ে সকলে মিলিয়া ফরাগত করিয়া খাওয়া দাওয়া করিলে রোজগারে বরকত রিযিকে ফরাগত হইবে।
শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফে আছে— শা’বানের চৌদ্দ নীচের দোয়া চল্লিশ বার পড়িলে চল্লিশ বৎসরের ছগীরা গুনাহ্ মাফ হইয়া যাইবে।
শবে বরাতের আমলের দোয়ার অর্থ:– আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত সাহায্য ছাড়া পাপ হইতে বাঁচিবার এবং সৎকাজ করিবার কাহারও কোন উপায় শক্তি নাই।