রজব মাসের ফজিলত ও বরকত
রজব মাস— এই মাসের প্রথম, পনর এবং শেষ তারিখে গোসল করিলে মায়ের গর্ভ হইতে বাহির হওয়ার সময় যেরূপ নিষ্পাপ থাকে সেরূপ পবিত্র হইবে। এই মাসের পাঁচটি রাত্র ইবাদতের জন্য বড়ই আফফ্ফল। যথাঃ- প্রথম তারিখের রাত অর্থাৎ চাঁদের রাত, পনর তারিখের রাত অর্থাৎ চৌদ্দ তারিখ দিনগত রাত এবং শেষ তিন রাত।
রজব মাসের ফজিলত
রজব মাসের ফজিলত,এই মাসে ত্রিশ রাকাত নফল নামাজ পড়া যায়। প্রত্যেক রাকাতে সূরা কাফিরূন তিনবার ও সূরা ইখলাছ তিনবার করিয়া পড়িতে হয়। রজব মাসের নামাজ মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে পড়িতে হয়। রজব মাসের নামাজ পড়িলে আল্লাহ্ তায়ালা সমস্ত গুনাহ্ মাফ করিবেন এবং প্রত্যেক দিন বদরের শহীদানের সমান আমল উঠানো হইবে। সমস্ত মাস রোযাদারগণের এবং সমস্ত বৎসর নামাজীদের সমান ছওয়াব দান করা হইবে।
রজব মাসের ফজিলত, উক্ত নামাজ দশ রাকাত চাদের প্রথম তারিখের রাতে, তারপর দশ রাকাত চৌদ্দ তারিখ দিনগত রাতে এবং বাকী দশ রাকাত ঊনত্রিশ তারিখের রাতে অর্থাৎ আটাশ তারিখ দিনগত রাতে পড়িবে। চাদের রাতে দশ রাকাত নামাজের পর নীচের দোয়াটি হাত উঠাইয়া তিনবার পড়িবে। রজব মাসের ফজিলতের নামাজ
বাঃ উঃ― লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হাম্দু ইয়ুত্য়ী ওয়া ইয়ুমীতু ওয়া হুয়া হাইয়্যুল্ লা ইয়ামুতু বিয়াদিহিল্ খাইরু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। আল্লাহুম্মা লা মানেয়া লিমা আ’তাইতা ওয়ালা মু’তিয়া লিমা মানা’তা ওয়া লা ইয়ান্ফাউ যাল জাদ্দি মিকাল্ জাদ্দু।
অর্থ: আল্লাহ্ তায়ালা ছাড়া অন্য কোন মা’বুদ নাই। তিনি একক, তাঁহার কোন অংশীদার নাই। সমগ্র সৃষ্টি রাজ্য তাঁহারই এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁহারই। তিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। তিনি চিরঞ্জীব, তিনি কখনও মরেন না। তাঁহারই হাতে সকল কল্যাণ, এবং তিনি সৃষ্ট সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান। হে আল্লাহ্! তুমি যাহা দান করিয়াছ উহাতে বাধা প্রদান কারী কেহ নাই। প্রচেষ্টাকারীকে তাহার প্রচেষ্টা তোমার শাস্তি হইতে রক্ষা করিতে বা অধিক কিছু লাভে উপকার করিতে পারিবে না।
রজব মাসের ফজিলতের নামাজ তারপর যে দোয়া করিবে কবুল হইবে।
আরো পড়ুন তাহাজ্জুতের নামাজের নিয়ম ও নিয়ত>>>
অতঃপর চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে দশ রাকাত নামাজ পড়িয়া হাত উঠাইয়া পরবর্তী দোয়াটি তিনবার পড়িবে—
বাঃ উঃ— লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু লাহুল্ মুকু ওয়া লাহুল হাম্দু ইয়ুরী ওয়া ইয়ুমীতু ওয়া হুয়া হাইয়্যুল লা ইয়ামুতু বিয়াদিহিল খাইরু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর, ইলাহাও ওয়াহেদান্ আহাদান ছামাদান ফারদান বিত্তাল্ লাম্ইয়াত্তাখিয্ ছাহেবাতাঁও ওয়া লা ওয়ালাদা।
তারপর যে দোয়া করিবে কবুল হইবে। অতঃপর আটাশ তারিখ দিনগত রাতে বাকী দশ রাকাত নামাজ পড়িয়া হাত উঠাইয়া নীচের দোয়া তিনবার পড়িবে।
বাঃ উঃ- লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া নাহুল হামদু ইয়ূয়ী ওয়া ইয়ুমীতু ওয়া হুয়া হাইয়্যুল লা ইয়ামুতু বিয়াদিহিল বাইক ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। ওয়া ছাল্লাল্লাহু আলা ছাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিও ওয়া আলিহীত্তাহিরীনা ওয়া লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল্ আযীম।
অর্থঃ আল্লাহ্ তায়ালা ছাড়া অন্য কোন মা’বুদ নাই। তিনি একক, তাঁহার কোন অংশীদার নাই। সমগ্র সৃষ্টি রাজ্য তাহারই এবং সমস্ত প্রশংসা তাহারই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি চিরঞ্জীব, তিনি কখনও মরেন না। তাঁহারই হাতে সকল কল্যাণ এবং তিনি সৃষ্ট সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান। আল্লাহ্ তায়ালা ছায়্যেদিনা হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম এবং তাহার পবিত্র বংশধরগণের উপর রহমত নাযিল করুক। সর্ব্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী মহান আল্লাহ্ তায়ালার সাহায্য ব্যতীত পাপ হইতে বাঁচিবার উপায় এবং ইবাদত করার কাহারও শক্তি নাই।
তারপর যে দোয়া করিবে কবুল হইবে। ঐ নামাঙ্গী ও দোযখের মধ্যে সত্তর খন্দক ব্যবধান হইবে। প্রত্যেক খন্দকের প্রশস্ত পাচশত বৎসরের রাস্তা হইবে এবং প্রত্যেক রাকাতে হাজার হাজার রাকাতের ছওয়াব মিলিবে।
হযরত সালমান ফারছী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আন্হু এই নামাজ হাদীছ শরীফহইতে বর্ণনা করিয়াছেন।
রজব মাসে প্রত্যেক জুমার দিন জুমা ও আছরের মধ্যবর্তী সময়ে এক সালামে চার রাকাত নফল নামাজ পড়া যায়। এই নামাজের প্রত্যেক রাকাতে আয়াতুল কুরছী সাতবার এবং সূরা ইখলাছ পাচবার পড়িতে হয়।
সালামের পর নীচের দোয়া পঁচিশ বার পড়িবে।
বাঃ উঃ— লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহিল কাবীরিল মুতাআল। অর্থঃ মহান মৰ্য্যাদাশীল আল্লাহ্ তায়ালার প্রদত্ত সহায়তা ছাড়া গুনাহ্ হইতে বাঁচিবার এবং সৎকাজ করিবার কাহারও কোন উপায় ও শক্তি নাই।
তারপর নীচের ইস্তিগফার একশত বার পড়িবে:—
বাঃ উঃ— আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাযী লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল্ হাইয়্যুল কাইয়্যুম গাফ্ফারুয্ যুনুবে ছাত্তারুল উয়ুবে ওয়া আতুবু ইলাইহে।
অর্থঃ আমি আল্লাহ্ তায়ালার নিকট ক্ষমা চাহিতেছি; যিনি ব্যতীত অন্য কোন
মা’বুদ নাই। তিনি চিরঞ্জীব, তিনি চিরস্থায়ী, গোনাহ্ সমূহের অসীম ক্ষমাকারী,
দোষ-ত্রুটি সমূহের অতীব গোপনকারী এবং (পাপ আর না করার দৃঢ় সংকল্প
লইয়া অনুতপ্ত হৃদয়ে) তাঁহারই (আল্লাহ্ তায়ালার) নিকট তওবা (প্রত্যাবর্তন)
করিতেছি।
রজব মাসের ফজিলতের নামাজ অতঃপর একশত বার দরূদ শরীফ পড়িয়া নিজের মছুদ তলব করিবে। আল্লাহ্ তায়ালার রহমতে নিশ্চয়ই কবুল হইবে। গুনিয়াতু ত্তালেবীন ও রেছালায়ে ফ্যায়েলুশ শুহুর নামক কিতাবে এই নামাজ বর্ণনা করা হইয়াছে।
tags:আমল,ইসলাম,
আরো জানুন এবং পড়ুন>>